প্রিয় মা,
জানিনা ওপারে তুমি কেমন অাছো!
শুনেছি অামাকে ভর্তি করানোর জন্য তুমি স্কুলে গিয়েছিলে, অার সেখানটায় ছেলেধরা বলে মানুষগুলো তোমায় মেরেছে
ছোট থাকতে তো বুঝতাম না, কয়েকদিন অাগে ছোট মামা ফোন কিনে দিলো তা দিয়ে হুট করে ভিডিওটা দেখলাম, তোমার বাঁচার অাকুতি, তুমি চিৎকার করে বলছিলে অামি মা, অামারও সন্তান অাছে,
অামি কারো সন্তান নিতে অাসেনি, কিন্তু ওরা..! ওরা তোমায় বাঁচতে দেয়নি..
ওরা তোমায় রাস্তায় ফেলে মারলো, শুধু মারলো না, অামায় মা ডাকার সুযোগটা তারা দিলোনা...
জানো মা সেদিন থেকে জানতাম তুমি শপিং এ গেছো, অামার জন্য জামা কিনবা বলে, যখনই জিজ্ঞেস করতাম সবাই বলতো মা অাসবে, বাইরে গেছে, অামিও বোকার মতো বলে যেতাম তুমি অাসবা, কিন্তু তুমি তো অাসলে না...
যখন থেকে বুঝতে শিখলাম সবাই বলত তুমি নাকি এক্সিডেন্ট এ মারা গেছো, কিন্তু কি করে মারা গেলে কেউ বলত না, অামি বার বার তোমার ছবিটা দেখে কাঁদতাম, তোমার উপর রাগ করতাম, তুমি ফিরছো না বলে, কিন্তু অাজ যখন সত্যিটা জানলাম বিশ্বাস করো মা তোমার উপর অামার কোন রাগ নেই, অভিমান নেই...
তুমি যে স্কুলটায় অামায় ভর্তি করতে নিয়ে গিয়েছিলে অামি সেই স্কুল থেকে পাশ করে বেরিয়েছি, তাও প্রতিটা ক্লাসে ফার্স্ট হয়েছি, স্কুলের টিচাররা অামায় মায়ের অাদর দিতো, কিন্তু অামি তো বুঝতাম ওরা তো অামার মা নয়, ওদের তো অামি বাসায় ফিরলে পাইনা, অামার রুমটায় তুমি অাসোনা, তোমায় পাইনা, কোথায় তুমি...?
অামি বুঝি মা, তোমাকে এখন অামি অার ছুঁতে পারবোনা, সামনা সামনি দেখতে পাবোনা, তুমি চলে যেতে চাওনি, তোমায় মানুষরুপী পশুগুলো বাঁচতে দেয়নি।
অামি ওদের সবাইকে চিনি, খুব ভালো ভাবে চিনি, অামি যখন স্কুলে যাই ওরা অামার দিকে তাকায়, মনে হয় অামায় একা পেলে তোমার মত অামাকেও রাস্তায় ফেলে মেরে ফেলবে, ভুল বললাম হয়তো, অামি তো মেয়ে ওরা অামায় মারতো না শুধু ওরা হয়তো অামার শরীরটা নিয়ে নোংরামিও করতো....
মা তোমার শাড়িগুলো মাঝে মাঝে অামি পড়ি, মাঝে মাঝে সাজতে ইচ্ছে করে, কিন্তু অামি যখন কাজলটা চোখে দিতে চাই তখনই চোখ বেয়ে জল পড়ে অামার, মুখটা কালো কাজলে ভরে যায়, তুমি অামি পারিনা নিজেকে সামলাতে, তোমার প্রতিচ্ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠে, ঢুঁকড়ে কাঁদি অামি, কেউ শুনে না মা, কেউ না..
অামি যখন কাঁদতাম, তুমি অামায় বুকে অাগলে রেখে ঘুম পাড়াতে, এখন তো অামার কান্না থামেনা মা...
তুমিও কি শুনোনা মা..?
চোখের সামনে তোমার ছবিটা রেখে অনেকবার তো তোমার সাথে কথা বলি, তুমি কেন জবাব দাও না মা..?
কেন দাও না...?
অামি কাউকে বলবোনা মা, তুমি এসো অামার অন্ধকারে, শুধু একটিবার বুকে নিয়ে কপালটা'য় চু'মু দিয়ে যাও, যেমনটা সেই ছোট্ট বেলায় তুমি ঘুম পাড়াতে দিতে....
পোস্টমর্টেম করার পর তোমার রক্ত মাখা শাড়িটা মামা নিয়ে এসেছিলো, সেটি এখনো অালমিরাতে অাছে, শুকিয়ে গেছে রক্তের দাগ, অামি শাড়িটা খুলতে পারিনা মা , অামার ভিতর তীব্র যন্ত্রণা অনুভব হয়...
ওরা কেন তোমায় কেড়ে নিলো মা...?
কেন তুমি এভাবে চলে গেলে..?
অাসলেই কি তুমি ছেলেধরা ছিলে মা..?
উত্তরটুকু দিও মা, অামি ঘুমিয়ে যাচ্ছি তোমার ছবিটা বুকে নিয়ে...
ভোর হওয়ার অাগেই তুমি এসো মা, অামি অপেক্ষায় থাকবো...
ইতি
তাসনিম
লেখক- জোনায়েদ নাঈম
জানিনা ওপারে তুমি কেমন অাছো!
শুনেছি অামাকে ভর্তি করানোর জন্য তুমি স্কুলে গিয়েছিলে, অার সেখানটায় ছেলেধরা বলে মানুষগুলো তোমায় মেরেছে
ছোট থাকতে তো বুঝতাম না, কয়েকদিন অাগে ছোট মামা ফোন কিনে দিলো তা দিয়ে হুট করে ভিডিওটা দেখলাম, তোমার বাঁচার অাকুতি, তুমি চিৎকার করে বলছিলে অামি মা, অামারও সন্তান অাছে,
অামি কারো সন্তান নিতে অাসেনি, কিন্তু ওরা..! ওরা তোমায় বাঁচতে দেয়নি..
ওরা তোমায় রাস্তায় ফেলে মারলো, শুধু মারলো না, অামায় মা ডাকার সুযোগটা তারা দিলোনা...
জানো মা সেদিন থেকে জানতাম তুমি শপিং এ গেছো, অামার জন্য জামা কিনবা বলে, যখনই জিজ্ঞেস করতাম সবাই বলতো মা অাসবে, বাইরে গেছে, অামিও বোকার মতো বলে যেতাম তুমি অাসবা, কিন্তু তুমি তো অাসলে না...
যখন থেকে বুঝতে শিখলাম সবাই বলত তুমি নাকি এক্সিডেন্ট এ মারা গেছো, কিন্তু কি করে মারা গেলে কেউ বলত না, অামি বার বার তোমার ছবিটা দেখে কাঁদতাম, তোমার উপর রাগ করতাম, তুমি ফিরছো না বলে, কিন্তু অাজ যখন সত্যিটা জানলাম বিশ্বাস করো মা তোমার উপর অামার কোন রাগ নেই, অভিমান নেই...
তুমি যে স্কুলটায় অামায় ভর্তি করতে নিয়ে গিয়েছিলে অামি সেই স্কুল থেকে পাশ করে বেরিয়েছি, তাও প্রতিটা ক্লাসে ফার্স্ট হয়েছি, স্কুলের টিচাররা অামায় মায়ের অাদর দিতো, কিন্তু অামি তো বুঝতাম ওরা তো অামার মা নয়, ওদের তো অামি বাসায় ফিরলে পাইনা, অামার রুমটায় তুমি অাসোনা, তোমায় পাইনা, কোথায় তুমি...?
অামি বুঝি মা, তোমাকে এখন অামি অার ছুঁতে পারবোনা, সামনা সামনি দেখতে পাবোনা, তুমি চলে যেতে চাওনি, তোমায় মানুষরুপী পশুগুলো বাঁচতে দেয়নি।
অামি ওদের সবাইকে চিনি, খুব ভালো ভাবে চিনি, অামি যখন স্কুলে যাই ওরা অামার দিকে তাকায়, মনে হয় অামায় একা পেলে তোমার মত অামাকেও রাস্তায় ফেলে মেরে ফেলবে, ভুল বললাম হয়তো, অামি তো মেয়ে ওরা অামায় মারতো না শুধু ওরা হয়তো অামার শরীরটা নিয়ে নোংরামিও করতো....
মা তোমার শাড়িগুলো মাঝে মাঝে অামি পড়ি, মাঝে মাঝে সাজতে ইচ্ছে করে, কিন্তু অামি যখন কাজলটা চোখে দিতে চাই তখনই চোখ বেয়ে জল পড়ে অামার, মুখটা কালো কাজলে ভরে যায়, তুমি অামি পারিনা নিজেকে সামলাতে, তোমার প্রতিচ্ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠে, ঢুঁকড়ে কাঁদি অামি, কেউ শুনে না মা, কেউ না..
অামি যখন কাঁদতাম, তুমি অামায় বুকে অাগলে রেখে ঘুম পাড়াতে, এখন তো অামার কান্না থামেনা মা...
তুমিও কি শুনোনা মা..?
চোখের সামনে তোমার ছবিটা রেখে অনেকবার তো তোমার সাথে কথা বলি, তুমি কেন জবাব দাও না মা..?
কেন দাও না...?
অামি কাউকে বলবোনা মা, তুমি এসো অামার অন্ধকারে, শুধু একটিবার বুকে নিয়ে কপালটা'য় চু'মু দিয়ে যাও, যেমনটা সেই ছোট্ট বেলায় তুমি ঘুম পাড়াতে দিতে....
পোস্টমর্টেম করার পর তোমার রক্ত মাখা শাড়িটা মামা নিয়ে এসেছিলো, সেটি এখনো অালমিরাতে অাছে, শুকিয়ে গেছে রক্তের দাগ, অামি শাড়িটা খুলতে পারিনা মা , অামার ভিতর তীব্র যন্ত্রণা অনুভব হয়...
ওরা কেন তোমায় কেড়ে নিলো মা...?
কেন তুমি এভাবে চলে গেলে..?
অাসলেই কি তুমি ছেলেধরা ছিলে মা..?
উত্তরটুকু দিও মা, অামি ঘুমিয়ে যাচ্ছি তোমার ছবিটা বুকে নিয়ে...
ভোর হওয়ার অাগেই তুমি এসো মা, অামি অপেক্ষায় থাকবো...
ইতি
তাসনিম
লেখক- জোনায়েদ নাঈম
No comments:
Post a Comment